বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪ , ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Dainik Provat

কালিয়াকৈর সিএনজি স্টেশনের গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে  শিল্প কারখানা ও বাসা-বাড়ির রান্নার কাজে

গ্রাম-বাংলা

জুয়েল রানা, কালিয়াকৈর 

প্রকাশিত: ১৩:২১, ২৭ আগস্ট ২০২৩

সর্বশেষ

কালিয়াকৈর সিএনজি স্টেশনের গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে  শিল্প কারখানা ও বাসা-বাড়ির রান্নার কাজে

ফাইল ছবি

 

 


গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার প্রায় সবগুলো সিএনজি স্টেশনে যানবাহনের ব্যবহারযোগ্য গ্যাসের তীব্র সংকট  দেখা দিয়েছে। দিন রাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত স্টেশনগুলো সরকারি এক নির্বাহী আদেশে বন্ধ থাকে। এরপর রাত এগারোটা থেকে পরের দিন ছ'টা পর্যন্ত  নিরবিচ্ছিন্ন  গ্যাস সরবরাহের কথা থাকলেও এই সময়ের মধ্যে উপজেলার প্রায় সবগুলো সিএনজি স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে প গ্যাস সরবরাহ না থাকায়  লোকজন অলস সময় পার করছেন । কয়েকটি সিএনজি  ষ্টেশনে কর্মচারীদের সাময়িক ছুটি দিয়ে সিএনজি স্টেশন সাময়িক  বন্ধ  রাখা হয়েছে।  সিএনজি স্টেশনের সামনে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় সাময়িকভাবে বন্ধ অথবা কোন সি এন জি স্টেশনের সামনে ছোট সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে তাতে লেখা রয়েছে "গ্যাস নাই"। ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের  চন্দ্রা, পল্লী বিদ্যুৎ, মৌচাক, হিজলতলী, সূত্রাপুর বোর্ড  ঘর এবং এইসব এলাকায় যেসব সিএনজি  স্টেশন  রয়েছে এসব স্টেশনে  গিয়ে দেখা যায় লাইনে গ্যাস না থাকায় স্টেশনের বাউন্ডারির ভেতরে লাল ফিতা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে  সিএনজি স্টেশনে যখন পিক আওয়ার থাকে অর্থাৎ  রাত এগারোটা থেকে পরের দিন সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত,এরমধ্যে দেখা যায় শিল্প কারখানার জন্য অবৈধভাবে  বড় বড় কাভার ভ্যানের ভেতরে ৫০ থেকে ১০০ টা পর্যন্ত সিলিন্ডার সাজিয়ে বিশেষ কায়দায় সেখানে গ্যাস সরবরাহের জন্য যন্ত্রাংশ বসিয়ে সিএনজি স্টেশনে থেকে অবৈধভাবে গ্যাস নিয়ে শিল্প কারখানায় ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় উপজেলার বিভিন্ন  খাবারের হোটেলে রান্নাবান্নার কাজেও ব্যবহার হচ্ছে সিএনজি স্টেশনের এই গ্যাস।
এ বিষয়ে কথা হয় শিলা বৃষ্টি সিএনজি স্টেশনের মালিক ও উপজেলার সূত্রাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব বজলুর রহমানের সাথে । তিনি আক্ষেপ করে  বলেন, কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্টেশনগুলো আর চালাতে পারবো না -কারণ সন্ধ্যা ছ'টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত সরকারের  নির্বাহী আদেশে সিএনজি স্টেশনগুলো বন্ধ রাখা হয়, তারপর রাত এগারোটা থেকে পরের দিন সন্ধ্যা ছ'টা পর্যন্ত সিএনজি  স্টেশন গুলো চালু রাখা হলেও বিদ্যুতের লোডশেডিং, গ্যাস লাইনে পর্যাপ্ত গ্যাস না থাকায় সিএনজি স্টেশনের মালিকরা চরম বেকায়দায় পড়ে গেছি। মাঝে মাঝে সিএনজি  স্টেশনের কর্মচারীদের খণ্ডকালীন ছুটি  দেয়া হয়। প্রতিবেদককে তিনি  আরো বলেন, গ্যাস  কোম্পানির সাথে  যে চুক্তি ছিল তাতে ৫০ পি এস আই লাইন থেকে আমাদেরকে ১৫ পি এস আই গ্যাস  দেয়ার কথা থাকলেও আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ ১ পিএসআই গ্যাসও আমরা পাই না। বজলুর রহমান আরো বলেন, অনেক সময় রাত ন' টার পরে ১১ টার আগে গ্যাস লাইনে চাপ থাকলেও সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা রাত এগারোটার আগে গ্যাস পাম্পের মেশিন স্টার্ট দিতে পারি না।  ওই সময় যদি আমরা সিএনজি স্টেশনের মেশিন চালাতে পারতাম তবে আমাদের যে রিজার্ভ  ট্যাংকি রয়েছে সেই রিজার্ভ ট্যাংকিগুলোতে আমরা গ্যাস মজুদ করতে পারলে পরে হয়তো অফ পিক আওয়ারে  অথবা বিদ্যুতের লোডশেডিং থাকলেও আমরা ক্রেতাদের গ্যাস সরবরাহ করতে পারতাম। মাঝেমধ্যে তিন চাকার সিএনজি ও ব্যক্তিগত যানবাহন নিয়ে এসে যখন সিএনজি স্টেশনে এসে আমাদের নিকট গ্যাস দাবি করে তখন আমরা গ্যাস নেই বলে জানিয়ে দিলে অনেক সময় চালকদের সাথে আমাদের বাগবিতণ্ডা হয়। 
শিলা বৃষ্টি সিএনজি স্টেশনের সুপারভাইজার মিলন বলেন, পূর্বে যখন প্রতি লিটার সিএনজি গ্যাসের দাম ৮ টাকা ৫০ পয়সা ছিল তখন বিক্রি হতো চব্বিশ ঘন্টায় ছয় থেকে সাত লাখ টাকা, আর এখন প্রতি লিটার ৪৩ টাকা হলেও ২৪ ঘন্টায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার গ্যাস বিক্রি হয়, এতে বিদ্যুৎ খরচ ও কর্মচারী বিল বেতন দিয়ে মালিকদের প্রতি মাসে এবং প্রতিদিনভর্তুকি দিতে হয়। অর্থাৎ ব্যবসায় প্রতিদিন লোকসান হচ্ছে। এমতাবস্থায় এ পরিস্থিতির উত্তরণ না ঘটাতে পারলে সিএনজি স্টেশনগুলো ক্রমশ বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারের কাছে এই পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান। 
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়